আলোর মনি রিপোর্ট: সহজ ও সুলভ সবজি ঝিঙে। ঝিঙে দু’রকমের হয়ে থাকে। তেতো ও মিষ্টি। ফলে ক্রেতামহলে এর চাহিদা রয়েছে। এবার জৈব সারে খাদ্যগুণে ভরা সতেজ ঝিঙে চাষে কৃষকরা উৎসাহিত হয়েছেন।
লালমনিরহাট জেলার ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলার ৪৫টি ইউনিয়ন ও ২টি (লালমনিরহাট, পাটগ্রাম) পৌরসভার বিভিন্ন কৃষি জমিতে প্রচুর ঝিঙে চাষ করা হয়েছে। রাসায়নিক সারের পরিবর্তে আদর্শ জৈব সারে ঝিঙের মতো এ মৌসুমের সুস্বাদু সবজি উৎপাদন করে রীতিমতো চমকে দিয়েছেন কৃষকরা।
জানা যায়, এ মৌসুমে ঝিঙের চাহিদা রীতিমতো তুঙ্গে। এক বিঘা জমিতে আদর্শ জৈব সারে এই সবজি উৎপাদন করতে খরচও কম হয়।
আরও জানা যায়, লতানো জাতীয় সবজী চাষ করা হয় এমন জমিই ঝিঙে চাষের জন্য আদর্শ। ১বিঘা জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জৈব সার প্রয়োজন হয়। ৩০দিন হতে ৩৫দিনের মধ্যে ঝিঙে গাছে ফুল আসতে শুরু করে। ফুল আসার ৭দিন হতে ৮দিনের মধ্যে ফল ধরা শুরু হয়। ঝিঙে গাছে পোকার উপদ্রব দমন করতে ১বিঘা জমির ৪টি জায়গায় ‘আলোর ফাঁদ’ অর্থাৎ ফল ছিদ্রকারী পোকা আকৃষ্ট করতে ফাঁদ বসাতে হবে। তাতে পোকা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।
হাট ও বাজারে প্রতি কেজি ঝিঙে বিক্রি হচ্ছে ৪০টাকা কেজি দরে। আর পাইকারি হিসেবে প্রতি কেজি ঝিঙে ৩০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কোদালখাতা গ্রামের কমল কান্তি বর্মণ বলেন, আমাদের গ্রামে প্রতিটি বাড়িতেই কম আর বেশি ঝিঙে চাষ করা হয়ে থাকে। এতে করে নিজের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি ঝিঙে বাজারে বিক্রি করে দৈনিক আয়ও হয়।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুলতান সেলিম বলেন, রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সারে ঝিঙে চাষ ভালো হয়ে থাকে। তাই এ বিষয়ে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এ জৈব সার প্রয়োগ করে কৃষকরা সুফল পেয়েছেন।
খাদ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ঝিঙের উপকার অনেক। কুষ্ঠ ও অর্শ রোগে ভীষণ উপকারী। তেতো ঝিঙে বেটে শরীরের ফোলা অংশে প্রলেপ লাগালে দ্রুত ফোলা কমে যায়। কৃমি, কফ প্রভৃতি রোগেও ঝিঙের ব্যবহারে উপকার মেলে।